সুদীপ কুমার কুণ্ডু, তখন সে কিছুই জানতো না, কি হতে চলেছে তার সাথে, তবে ঘটনাবলী আরম্ভ হয়ে গেছে। সে একটি জীবনযুদ্ধে পরাজিত, বিপর্যস্ত সইনিকের মতন ফিরেছে - জিবনের কোন আশা নেই; কেউ নেই সাথে... তবে তখনো সে বোঝে নি, বোঝেনি যে ভিড় সরলে, তবেই ঈশ্বরকে দেখা যায়। তিনি তাকে কোন সময়েই ত্যাগ দেননি, তবে সে যে তাঁকে ডাকেই নি! তাই যে তিনি সবার পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সন্তানের কষ্টে বুক ফেটে যাচ্ছে, তাও কিচ্ছু করতে পারছেন না, তাঁকে যে সে ডাকেই নি!!
যখন সেই ভিড়, সেই অপ্রয়োজনীয়, বিরক্তিকর ভিড়, সেই তথাকথিত প্রিয়জনদের ভিড় হাল্কা হয়ে গেল, সেই প্রকৃত প্রেমী বেরিয়ে এল, সেই মহামহি, সেই বিশ্বজননী, স্নেহময়িকে দেখা গেল, দেখা গেল একটি আলক রশ্মির আকারে, তবে সেই রশ্মি যে অন্ধকার - ১০০ বছর ধরে দরজা বন্ধ থাকা অন্ধকার গহ্বর ন্যায় ঘরে ঢুকে জীবনটাকেই চরিতার্থ করে দিল। সেই আলো এসে আসন গ্রহন করলো দুই ভ্রূরুর মাঝে - সে ঘুমাতে পারতো না, বাঁচতে পারতো না! ...তীব্র তীব্র, সুতীব্র আকর্ষণ তৈরি হলো। না, না, কোন নারীর উপর নয়... সেই কপাল-স্থিত আলোক রশ্মির উপর আকর্ষণ!
যুদ্ধ আরম্ভ হল, শান্ত বিশ্বযুদ্ধের ন্যায় প্রকাণ্ড যুদ্ধ শুরু হলো। তবে তখনো কি সে জানতো, যে সেই আলোক রশ্মি তাকে প্রানবায়ু ফিরিয়ে দেবে। সে নিজেও জানলো না, কখন সে চিতার উপর উঠে বসেছে! আকর্ষণ, ধীরে ধীরে প্রেম সেই আলোক রশ্মির উপর - সেই আলোক রশ্মি যেন সুদীপের একমাত্র প্রেমিকা, সারা জীবনের - হ্যা এত বছর পরে সে তাই মনে করে! তবে সেই সময়ে নতুন কলির উপর প্রেম জন্মালে যেমন রাত্রের ঘুম উড়ে যায়, তেমনই সুদীপের ঘুম উড়ে গেল! আসলে চোখ বন্ধ করলেই সে দেখে যে সেই প্রকাণ্ড তেজস্মি আলোকের স্নিগ্ধতা সারা শরীরকেই জ্যোৎস্নার আলোয়ে উদ্ভাসিত করে। তবে প্রেম তার জীবনে নেই, তাই প্রেমের অভিজ্ঞতাও নেই - সে যে সেই দিব্য আলকের প্রেমে পরেছে, সেই উপলব্ধি করার মত প্রেমিক হৃদয় সুদীপের নেই! সে যে পারলে তরবারি নিয়ে রনপ্রাঙ্গনে নেমে পরে! ... সেই আলো যে তাকে ঘুমাতেই দিচ্ছে না! ণা ওর উপর জিততেই হবে। তবে কি করে? কোন উপায়ই যে খোলা পাওয়া যাচ্ছে না! ... না এক্কেবারে গোরায় পউছতে হবে! তবেই হবে!
সে ঠিক করলো, মনঃসংযোগ করবে সেই আলোতে! করলও তাই... ইংরাজিতে যাকে বলে মেডিটেশন, সেতা যে শিখে গেল, সেটা বোঝার মত ক্ষমতা তার তখন ছিল না! যেন বিশাল মরুভুমিতে পথ হারিয়ে মৃতপ্রায় এক ব্যাক্তি মরে যাবার সময়ে চিল উড়তে দেখে আশায় বুক বেঁধেছে! তবে পারছে না তো সে! কিছুতেই জিততে পারছে না, সেই আলোকের সাথে! তাঁর যে অসাম্নায় গতি!! কি এই আলো, এত গতি! ...। এত গতি..! ... এ যে আলর থেকেও বেশি গতি! না, অই আলোক রস্মিকে ধরতে হলে যে সুদিপকেও গতি বাড়াতে হবে! ... সেটাই বা কি করে!